এই গ্রুপে আমরা শুধুমাত্র সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি নিয়ে আলোচনা করব। মুভিগুলোর রিভিউ, ডাউনলোড-সাবটাইটেল লিঙ্ক, আপকামিং মুভির নিউজ ইত্যাদি শেয়ার করা হবে। আপনারা যদি আগ্রহী হন তাহলে আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন।
দক্ষিণ ভারতের চলচিত্র শিল্প নিয়ে কিছু কথাঃ
দক্ষিণ ভারতের চলচিত্র শিল্প মূলত চারটি ভাগে বিভক্ত- ১। তামিল (চেন্নাই), ২। তেলুগু (হায়দরাবাদ), ৩।কানন্দা বা কানাড়া (বেঙ্গালুরু) এবং ৪। মালায়লাম (কেরালা)। এই মুভি ইন্ডাস্ট্রি ভারতের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের হলেও ভারত এবং সমগ্র বিশ্ব্জুড়ে যেখানেই ভারতীয় মুভি দেখা হয়, বেশ জনপ্রিয়। এদের মধ্যে তামিল মুভি ইন্ডাস্ট্রি সবথেকে বড়, তার একাই প্রতি বছর প্রায় ২৫০ টি সিনেমা তৈরি করে এবং সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ এর মত মুভি রিলিজ হয় প্রতি বছর দক্ষিণ ভারতে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে ২০১৩ সালে সমগ্র ভারতে সিনেমা শিল্প থেকে মোট যে পরিমান আয় হয় তার শতকরা ৫৫ ভাগই আসে শুধুমাত্র তামিল ও তেলেগু মুভির আয় থেকে!
সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি ইন্ডাস্ট্রি কারিগরি সক্ষমতা ও বাজেটের দিক থেকে মুম্বাই তথা বলিউড মুভি ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনেক এগিয়ে। মৌলিক কাহিনী, চোখধাধানো নায়িকা, নজরকাড়া আ্যকশন ও স্পেশাল ইফেক্ট ইত্যাদি কারনে এই মুভি ইন্ডাস্ট্রি ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে। ইদানীং বলিউড এ ব্লকবাস্টার সাউথ ইন্ডিয়ান মুভিগুলোর রিমেক করার ট্রেন্ড শুরু হয়েছে যেমন আমির খানের গজনী, সালমান খানের ওয়া্নটেড-জয় হো-কিক, অজয় দেবগনের সিংঘাম ইত্যাদি। কলকাতায় এমনকি খোদ আমাদের ঢাকাই মুভিগুলাও অনেক সময় সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি থেকে কপি-পেস্ট করে তৈ্রী করা হচ্ছে। হাল আমলের জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান কিংবা অনন্ত জলিল এর মুভিতেই অনেক দৃশ্য সরাসরি সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি থেকে আ্যডাপ্ট করা হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। একটা কথা খুব প্রচলিত আছে যে, "সাউথ ইন্ডিয়ান দর্শকরা যতটা না তাদের মুভি দেখে তার চেয়ে বেশি দেখে কলকাতা ও ঢাকাই চলচিত্রের ডিরেক্টর-প্রডিউসার-স্ক্রিপ্ট রাইটাররা!"
এই মুভি ইন্ডাস্ট্রির এরকম রমরমা অবস্থা কিন্তু একদিনে তৈ্রী হয়নি। আশির দশকের প্রথম দিকে পরিচিত ছিল "মাদ্রাজী" ফিল্ম হিসেবে। তখনকার মুম্বাইয়ের শিল্পী-কলাকুশলীদের মধ্যে সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি ইন্ডাস্ট্রির প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞা কাজ করত। আস্তে আস্তে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে, বিশেষ করে ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে তার সবদিক দিয়েই বলিউড কে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে। এশিয়ার ২য় সর্বাধিক পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেতা রজনীকান্ত কিংবা বিশ্বব্যাপী পরিচিত অভিনেতা কমল হাসান এই ইন্ডাস্ট্রিরই সৃষ্টি।
আমাদের বাংলাদেশের দর্শকরা হিন্দী মুভি যতটা দেখে তামিল বা তেলুগু মুভি তার দশ ভাগের এক ভাগও দেখেনা। এর মূল কারন দুটিঃ
১। ভাষার দূর্বোধ্যতা
২। বলিউড নিয়ে মিডিয়ার বাড়াবাড়ি
আমাদের প্রথম সারির প্রিন্ট/ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বলিউড এর মুভি ও কলাকুশলীদের দিয়ে এত মাতামাতি করে যে মাঝেমধ্যে বুঝা যায়না এটা কি বাংলাদেশের মিডিয়া না ভারতের!।
যাই হোক আমরা সব দেশের, সব ভাষার মুভি দেখতে চেষ্টা করবো তবে অবশ্যই বাংলাদেশের মুভি ইন্ডাস্ট্রীকে সবসময়ই উৎসাহিত করতে হবে, আমাদের দেশের সিনেমা সিনেমাহলেই গিয়ে দেখতে হবে, পিসিতে কিংবা সেলফোনে নয়! সবাইকে ধন্যবাদ।
মুভি নিয়ে আমাদের দুটি ব্লগসাইট ও রয়েছে http://movie-reviews.tk/ এবং http://bangla-subtitle.tk/। এই দুইটি সাইট সবার জন্য উন্মুক্ত, যে কেউ চাইলে কন্ট্রিবিউট করতে পারেন।
তুষার হোসেইন
নীলাঞ্জনা চৌধুরী
জহির উল তুহিন